এই আগুন-পানির দিনেও সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম লোকেশ রাহুল। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার অনবদ্য এক ইনিংসে ১৩ চারে ১৭৭ বলে করেন ১০০ রান। ক্যারিয়ারের ১০ টেস্ট সেঞ্চুরির ৯টিই দেশের বাইরে করা রাহুলের এটা ইংল্যান্ডের মাটিতে চতুর্থ শতক। লর্ডসে দ্বিতীয়বারের মতো সেঞ্চুরি করে জায়গা করে নিলেন দিলিপ ভেংসরকারের ঠিক নিচে। এই ঐতিহাসিক মাঠে ভারতের হয়ে একাধিক টেস্ট শতক (তিনটি) করেছেন ভেংসরকার।
ইংল্যান্ডের করা ৩৮৭ রানের জবাবে ভারতও থামে ঠিক ৩৮৭ রানেই। শেষ দিকে মাত্র ১১ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে সমতা টেনে আনে ইংলিশ বোলাররা। ১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এ নিয়ে মাত্র ৯ বার দুই দলের প্রথম ইনিংসের স্কোর হলো সমান। সবশেষ এমন দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালে হেডিংলিতে, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের ম্যাচে।
লর্ডসে ভারতের জন্য দারুণ সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে দিন শুরু হয়েছিল। আগের দিন তিন উইকেটে ১৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাটিং শুরু করে দল। রাহুল ৫৩* এবং পান্ত ১৯* রানে ছিলেন। প্রথম সেশনেই তারা গড়েন ১৪১ রানের জুটি। কিন্তু ঠিক লাঞ্চের আগ মুহূর্তে রান আউটে কাটা পড়েন পান্ত। স্ট্রাইক নেয়ার তাড়ায় বেন স্টোকসের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায় নেন ৭৪ রানে। ১১২ বলের ইনিংসটি আটটি চার ও দুটি ছক্কায় সাজিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
দুই ছক্কায় রোহিত শর্মার সঙ্গে টেস্টে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডে (৮৮টি) ভাগ বসান পান্ত। এই তালিকার শীর্ষে এখনো বীরেন্দর শেবাগ (৯১)। একইসাথে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ছক্কার কীর্তিতে ভিভ রিচার্ডসকে (৩৬টি) ছাড়িয়ে যান পান্ত।
রাহুল এরপর সেঞ্চুরি পূর্ণ করে পরের বলেই আউট হন শোয়েব বশিরের বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা এবং তরুণ নিতিশ রেড্ডি মিলে ইনিংস গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৭২ রানের জুটির পর আউট হন রেড্ডি (৩০)। বেন স্টোকসের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর জাদেজা ফিফটি তুলে নেন ৮৭ বলে। ওয়াশিংটন সুন্দারকে সঙ্গে নিয়ে আরও এক দারুণ জুটি গড়েন এই অলরাউন্ডার।
তবে ইনিংস গড়ার পথে জাদেজাও থেমে যান ৭২ রানে, ওকসের বলে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এরপর দ্রুতই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ইংল্যান্ডের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ক্রিস ওকস। ৮৪ রানে তিন উইকেট নেন তিনি। চার বছর পর টেস্টে ফেরা জফরা আর্চার ও স্টোকসের প্রাপ্তি দুটি করে উইকেট।
দিনের একদম শেষে উত্তেজনার জন্ম দেন জ্যাক ক্রলি ও ভারতীয় ফিল্ডাররা। বুমরাহর এক ওভারে ২ রান নেওয়ার পর সময় নষ্ট করার অভিযোগে তাকে কিছু বলেন গিল। এরপর ক্রলির গ্লাভসে বল লাগলে তিনি ফিজিও ডাকতে চাইলে আরেক দফা কথা কাটাকাটি হয়। তবে সব উত্তেজনা সত্ত্বেও খেলা শেষে হাত মেলাতে ভোলেননি কেউ।