‘সৈকতের চেয়ে টাফেলকে রাজি করানো সহজ ছিল’

বাংলাদেশ
‘সৈকতের চেয়ে টাফেলকে রাজি করানো সহজ ছিল’
সৈকত, মিঠু ও সাইমন টাফেল
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
বাংলাদেশে আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন অনেকদিনের। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায়ই আম্পায়ারদের বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে তুলকালাম হিয়ে থাকে। এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের আম্পায়াররা নেতিবাচক কারণে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন অনেকবার। তবে এমন দুরবস্থার মধ্যেও শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত জায়গা করে নিয়েছেন আইসিসির এলিট প্যানেলে।

মাসুদুর রহমান মুকুল থেকে শুরু করে গাজী সোহেল সবাই আইসিসি আয়োজিত বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। সম্প্রতি নারী বিশ্বকাপে আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন সাথিরা জাকির জেসি। বাংলাদেশের তৃণমূল থেকে আরও আন্তর্জাতিক মানের আম্পায়ার তুলে আনতে এবার সাইমন টাফেলের দ্বারস্থ হয়েছে বিসিবি।

আম্পায়ারদের পরামর্শ হিসেবে কাজ করবেন তিনি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের প্রশিক্ষণও দেবেন আইসিসির টানা পাঁচবারের বর্ষসেরা এই আম্পায়ার। তিনি সহযোগী হিসেবে পাচ্ছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ আম্পায়ার সৈকত। তাকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে আম্পায়ারদের এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধানের।

বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন তারা অপারেশন্স এবং এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট আলাদা করে দিয়েছেন। মূলত কাজের পরিধি বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। টাফেল এবং সৈকত দল হিসেবে কাজ করবেন বলে জানালেন মিঠু।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 'সৈকত আমাদের এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এখন আমরা অপারেশন ও এডুকেশনকে আলাদা করছি—একজন আম্পায়ারের মধ্যে অপারেশন আর এডুকেশনের দায়িত্বকে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। আসলে এসব বিষয় এখনো ড্রইং বোর্ড পর্যায়ে আছে। আমরা সব পরিকল্পনা, পাথওয়ে—সবকিছুই তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করেই এগিয়ে নেব। বর্তমানে তাঁরা একটি টিম হিসেবে কাজ করছেন।'

কয়েকমাস আগেই আম্পায়ার সৈকত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাকরি থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ডিপিএলে বিসিবি তাওহীদ হৃদয়ের দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল, যা সৈকত নিয়ম ভাঙা বলে মনে করেছিলেন। পরে বিসিবির আম্পায়ার বিভাগ নিজেদের ভুল স্বীকার করলে সৈকতের অভিমান দূর হয় এবং তিনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন। মিঠু জানিয়েছেন এবার আম্পায়ার্স এডুকেশন ডিপার্টমেন্টে তাকে যোগ করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সৈকতের চেয়ে টাফেলকে রাজি করানো সহজ ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন মিঠু।

তিনি বলেন, 'আমি একটা জিনিস বলি—ওকে রাজি করানো সৈকতকে রাজি করানোর চেয়েও সহজ ছিল। তাই আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ যে তিনি এতে সম্মতি দিয়েছেন। কারণ আমি তো দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি পরিকল্পনায় ছিলাম, আর সেই পরিকল্পনায় সৈকতকে চাইছিলাম। সুতরাং আমি অনেক ভাগ্যবান যে সৈকতের মতো একটি সম্পদ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে রয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের আর বিদেশিদের ওপর নির্ভর করতে হবে না।'

এদিকে নতুন দায়িত্ব নিয়ে সৈকত বলেছেন, 'আমাদের দেশে আম্পায়ারদের প্রতি সেই সম্মানটা কিছুটা কম, কারণ আমরা মূলত ক্রিকেটার-কেন্দ্রিক একটি জাতি। ফলে অন্য ক্ষেত্রগুলো এতদিন তেমনভাবে চিহ্নিত বা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এখন আপনারা দেখছেন যে ক্রিকেট বোর্ড থেকে এসব কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে হ্যাঁ—আমরা অন্য ক্ষেত্রগুলোকেও গুরুত্ব দিচ্ছি, সেগুলোর প্রতিও যত্নশীল হচ্ছি।'

আরো পড়ুন: বাংলাদেশ