হৃদয়ের পর সুমন ঝলক, একমাত্র টি-টোয়েন্টিও ইমার্জিং দলের
ছবি: বিসিবি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ওয়ানডে সিরিজের পর একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিও নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তৌহিদ হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে আয়ারল্যান্ড উলভসকে ১৮৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল টাইগার ক্রিকেটের তরুণরা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সুমন খানের বোলিং তোপে ১৫৪ রানেই থামে উলভসের ইনিংস। ফলে ৩০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাইফ হাসানের দল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই গ্যারেথ ডিলানিকে আনিসুল ইসলাম ইমনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সুমন। রানের খাতা খোলার আগেই তাই বিদায় নিতে হয় ডানহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে। তারপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে উলভস।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৫ রান যোগ করে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন উলভেস অধিনায়ক হ্যারি টেক্টর এবং স্টিফেন দোহানি। কিন্তু ৩টি চারের সৌজন্যে ২২ রান করা টেক্টরকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ বাতলে দেন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।
এর ৮ রান পরেই দোহানিকে ফেরান লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ২৪ বলে ২৯ রান করে আবারো ইমনের হাতে ক্যাচ দেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। অপরপ্রান্তে ডানহাতি ব্যাটসম্যান লরকান টাকার লক্ষ্য টপকাতে লড়াই চালিয়ে যান।
এর মধ্যেই ১ রান করা কার্টিস ক্যাম্ফারকে শামিম হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান তানভীর। ১৬ রান যোগ করে ফিরে যান উইককেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নেইল রকাও। তার উইকেটটি শিকার করেন শামিম। ফলে ১০০ রানের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
৪ নম্বরে নেমে উলভসের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা টাকারকে ফেরান বিপ্লব। এই লেগ স্পিনারকে সুইপ করে মারতে গিয়ে সাইফের হাতে কাটা পড়েন তিনি। আউট হবার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২২বলে ৩৮ রানের ইনিংস। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান বলার মতো রান করতে পারেননি।

যদিও শেন গেটক্যাট কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার টেষ্টা করেন। এতে তিনি শুরু হারের ব্যাবধানই কমিয়েছেন। লক্ষ্য থেকে ৩০ রান দূরে থেকে মাঠ ছাড়তে হয় উলভসকে। বাংলাদেশের জয়ে ৪ টি উইকেট শিকার করেন সুমন। ২ টি করে উইকেট তানভীর ও বিপ্লবের।
এদিকে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়ের ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। পাঁচ নম্বরে নেমে প্রথম বলেই দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে চার হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেন হৃদয়।
পরের বলেই ফ্লিক করে বল সীমানা ছাড়া করে আদায় করে নেন একটি ছয়। এরপর পুরো ইনিংস জুড়েই হাত খুলে খেলতে থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শুরুর ধাক্কা সামলে মূলত তার ব্যাটে ভর করেই স্কোরবোর্ডে ১৮৪ রান জমা করতে পারে ইমার্জিং দল। তিনিও হাফ সেঞ্চুরি করতে খরচ করেছেন মাত্র ২৮ বল।
১৯তম ওভারের ৪ নম্বর বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ৩৫ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। এই রান করতে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান হাঁকিয়েছেন ৭ টি চার ও ১ টি ছয়। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইমার্জিং দল। কিন্তু ইনিংসের ভিত গড়ার আগেই শূন্য রানে ফিরে যান আনিসুল।
দলীয় ৫ রানের মাথায় তাকে জশুয়া লিটলের ক্যাচ বানান গ্যারেথ ডেনালি। ওয়ানডে সিরিজে দারুণ ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয় উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ১০ বলে ৮ রান করে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
ইয়াসির আলি রাব্বি ব্যাট করতে নেমে ২ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ১৬ বলে ২২ রান করে ফিরে যান। তাকে উইকেটের পেছনে লর্কান টাকারের ক্যাচ বানান কার্টিস ক্যাম্ফার। ওপেনিংয়ে নেমে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন সাইফ। কিন্তু ১৩ ওভারের ৪ নম্বর বলে হাফ সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে থেকে থেমে দৃষ্টিকটু এক আউটে ফিরে যান তিনি।
মিডিয়াম পেসার শেন গেটক্যাটের ওয়াইডেরও বাইরের বল চার্জ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে পড়েন ইমার্জিং দলের এই অধিনায়ক। আউট হবার আগে ৫ চার ও ১ ছয়ের সুবাদে ৩৬ বলে তিনি করেন ৪৮ রান।
সাইফের আউট হবার পর ক্রিজে ব্যাট করতে আসেন মারকুটে ব্যাটনম্যান শামিম হোসেন। লেগ সাইডের বল ফ্লিক করে ছয় হাঁকিয়ে তিনিও ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন। হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হবার আগে মাত্র ১১ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি।
যার মধ্যে ২৪ রানই করেছেন ৪টি ছয়ের সাহায্যে। শামিমের আউটের পর হৃদয়কে কিছুটা সঙ্গ দেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এরপর আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এবং সুমন খান ১ ও ২ রান অপরাজিত থাকেন। উলভসের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন পিটার চেজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
বাংলাদেশ ইমার্জিং দল: (১৮৪/৭) (হৃদয় ৫৮, সাইফ ৪৮, শামিম ২৮; চেজ ২/৩৬)
আয়ারল্যান্ড উলভস: (১৫৪/১০) (টাকার ৩৮, দোহানি ২৯, গ্যাটকেট ২৬*; সুমন ৪/২৮)
ফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৩০ রানে জয়ী।