অভিষেকে জাকিরের সেঞ্চুরি, বিপদ কাটেনি বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশকে উড়িয়ে আইসিসির মাস সেরার মনোনয়ন পেলেন ওয়াসিম
১১ ঘন্টা আগে
প্রথম তিন দিনেই চট্টগ্রাম টেস্ট একরকম নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ৫১৩ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় তারা। তৃতীয় দিন বিকেলে এবং চতুর্থ দিনে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। জাকির হাসানের অভিষিক্ত সেঞ্চুরিতে দিন শেষে ছয় উইকেটে ২৭২ রান করে বাংলাদেশ। ম্যাচ জিততে আরও ২৪১ রান প্রয়োজন তাদের। ভারতের প্রয়োজন চার উইকেট।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের সূচনা করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক হাঁকিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এ কারণে দারুণ সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য সেই ধারা থেকে বের হন বাঁহাতি এই ওপেনার। তৃতীয় দিনে ভালো শুরুর পর চতুর্থ দিনও বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই দিন শুরু করেন তিনি।
দারুণ খেলতে খেলতে হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন শান্ত। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ১০৯ বলে কাঙ্খিত হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। তার সঙ্গে সমানতালে ব্যাট চালান জাকির হাসান। দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করে দুজন লাঞ্চে যান।
লাঞ্চ থেকে ফিরেও ভালো খেলছিলেন শান্ত। কিন্তু বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৬৭ রানে তাকে ফেরান উমেশ যাদব। দারুণ সেই ডেলিভারিটি শান্তর ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে চলে যায়। ক্যাচটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন বিরাট কোহলি। তার হাতে বল লেগে সেটা উইকেটরক্ষক ঋষভ পান্তের দিকে আসে। পান্ত শুন্যে পড়ার আগেই বলটি লুফে নেন। শান্তর ১৫৬ বলে খেলা এই ইনিংসে ছিল সাতটি চারের মার।
উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ১২৪ রান, টেস্টে ভারতের বিপক্ষে যা সর্বোচ্চ। শান্তর উইকেট যাওয়ার পর থিতু হতে পারেননি ইয়াসির আলী রাব্বিও। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও বোল্ড হন এই ব্যাটার। ১২ বলে ৫ রান করে অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হন তিনি। ১৩১ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশ।

লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে স্বাগতিকদের রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন জাকির। জাকির-লিটনের ৪২ রানের জুটিটি ভাঙেন কুলদিপ যাদব। কুলদিপের বলে লং অনে মারতে গিয়ে ব্যাটে-বলে এক করতে পারেননি লিটন। ফলে উমেশ যাদব সহজ ক্যাচে তার বিদায় নিশ্চিত করেন। ফেরার আগে ৫৯ বলে ১৯ রান করেন লিটন।
ভারতের ৪ ভেন্যুতে নারী বিশ্বকাপ, কলম্বোতে খেলবে পাকিস্তান
২ জুন ২৫
লিটনের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন জাকির। তুলে নেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরিও। অক্ষর প্যাটেলের ঝুলিয়ে দেয়া বলে সুইপ করে চার মেরে ২১৯ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তরুণ এই ওপেনার। বাংলাদেশের প্রথম ওপেনার এবং চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি পান জাকির। অভিষেক টেস্টে এর আগে বাংলাদেশের জার্সিতে সেঞ্চুরি আছে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মোহাম্মদ আশরাফুল এবং আবুল হোসেন রাজুর।
সেঞ্চুরির পর অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। সেটা ব্যাটের কানায় লেগে তারপর প্যাডে আঘাত করে চলে যায় স্লিপে থাকা বিরাট কোহলির হাতে। তাতে ১০০ রানেই ফিরে হয় জাকিরকে।
দলকে বিপর্যয় থেকে টেনে তুলতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। যদিও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ইয়াসিরের পর অক্ষরের বলে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ২৩৪ রানে মুশফিকের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তারপর চটজলদি ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও। মুশফিক যে ওভারে ফিরেছেন সেই ওভারের শেষ বলে সোহানকে (৩) স্টাম্পিং করেন পান্ত। বাকি সময়টা নিরাপদে পার করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব ৬৯ বলে ৪০ রানে অপরাজিত আছেন। সঙ্গী মিরাজ ৪০ বলে ৯ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ভারত (প্রথম ইনিংস)- ৪০৪/১০ (১৩৩.৫ ওভার) (পূজারা ৯০, শ্রেয়াস ৮৬, অশ্বিন ৫৮, পান্ত ৪৬, কুলদিপ ৪০; মিরাজ ৪/১১২, তাইজুল ৪/১৩৩)।
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৫০/১০ (৫৫.৫ ওভার) (শান্ত ০, জাকির ২০ ইয়াসির ৪, লিটন ২৪, মুশফিক ২৮, সাকিব ৩, সোহান ১৬, মিরাজ ২৫, এবাদত ১৭; কুলদীপ ৫/৪০, সিরাজ ৩/২০)।
ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৫৮/২ ডিক্লে (৬১.৪ ওভার) (রাহুল ২৩, গিল ১১০, পূজারা ১০২*, কোহলি ১৯*; খালেদ ১/৫১)।
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৭২/৬ (১০২ ওভার) (লক্ষ্য ৫১৩ রান) (শান্ত ৬৭, জাকির ১০০, লিটন ১৯, মুশফিক ২৩, সাকিব ৪০*, মিরাজ ৯*; অক্ষর ৩/৫০)।