ভারতকে স্পিন জালে ফাঁসিয়ে জয়ের খুব কাছে অস্ট্রেলিয়া

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
লঙ্কানদের গুঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড গড়া জয়
১ ফেব্রুয়ারি ২৫
নাগপুর-দিল্লি টেস্টের সবটা জুড়ে শিরোনামে ছিল কেবল ভারতের স্পিন জালে আটকে গেল অস্ট্রেলিয়া। ইন্দোরেও দেখা যেতে পারতো এমন চিত্র। তৃতীয় টেস্টের ভেন্যুতেও পাতা ছিল সেই পুরোনো স্পিন জাল। তবে এবার অস্ট্রেলিয়া নয়, নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেরাই ডুবে মরছে ভারত। ইন্দোরে নাথান লায়নের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৬৩ রানে আটকে গেছে রোহিত শর্মার দল। চেতেশ্বর পূজারার হাফ সেঞ্চুরি পেরোনো ইনিংসে ৭৫ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। ভারতকে তাদেরই স্পিন জালে আটকে দিয়ে ইন্দোরে জয়ের খুব কাছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজে প্রথম জয়ের দেখা পেতে শেষ তিনদিনে সফরকারীদের চাই কেবল ৭৬ রান।
ইন্দোরে আগের দিনের ৪ উইকেটে ১৫৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা অজি ব্যাটারদের বিপক্ষে প্রথম সেশনের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছিলেন উমেশ যাদব এবং মোহাম্মদ সিরাজ। বিশেষ করে দারুণ সব সুইংয়ে পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও ক্যামেরন গ্রিনকে পরাস্ত করছিলেন উমেশ। তবে গ্রিন ও হ্যান্ডসকম্বের জুটি ভাঙেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের মিডল অ্যান্ড লেগ স্টাম্পের ডেলিভারিতে শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রেয়াস আইয়ারের হাত ক্যাচ দেন হ্যান্ডসকম্ব। ৯৮ বল খেলা এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ১৯ রান করে।
পরের ওভারে থিতু হওয়া গ্রিনকে ফেরান উমেশ। ডানহাতি এই পেসারের বলে অ্যাক্রোস দ্য লাইন খেলতে চেয়েছিলেন গ্রিন। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। যার ফলে বল প্যাডে আঘাত করলে আবেদন করতেই আউট দেন অনফিল্ড আম্পায়ার। যদিও তখনই রিভিউ নেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি ২১ রান করা গ্রিনের। এরপর অজিদের বেশিক্ষণ টিকতে দেননি উমেশ-অশ্বিনরা। নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করেছেন উমেশ।

স্টার্ককে সাজঘরে পাঠিয়ে দেশের মাটিতে একশ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন অভিজ্ঞ এই পেসার। এদিকে অ্যালেক্স ক্যারিকে ঠিকঠাক দাঁড়াতেই দেননি অশ্বিন। দারুণ এক ডেলিভারিতে ক্যারিকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন তিনি। উমেশের বলে বোল্ড হয়ে টড মারফি ফেরার পর অশ্বিনকে উইকেট দিয়েছেন লায়ন। নিজেদের শেষ ১২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যদিও ভারতের চেয়ে ৮৮ রানে এগিয়ে ছিল স্টিভ স্মিথের দল।
সতীর্থ থেকে কোচ হওয়া টেইটকে নিয়ে রোমাঞ্চিত তাসকিন
২৯ মে ২৫
অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ৮৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালো করতে পারেনি ভারত। বিনা উইকেটে ১৩ রান নিয়ে বিরতিতে গেলেও বিরতি থেকে ফেরার প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। লোকেশ রাহুলের অফ ফর্মে একাদশে সুযোগ পেলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি শুভমান গিল। প্রথম ইনিংসে ৫ রান করা তরুণ এই ওপেনার লায়নের বলে বোল্ড হয়েছেন আবারও ৫ রানে। লায়ন ও ম্যাথু কুনেমানের স্পিন সামলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন রোহিত ও পূজারা। তবে জুটি বড় করতে দেননি লায়ন। অভিজ্ঞ এই স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন রোহিত। তবে ব্যাটে-বলে না হওয়ায় তা রোহিতের প্যাডে আঘাত করে।
আম্পায়ার আউট দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ নেন ভারতের অধিনায়ক। তবে জীবন পাওয়া হয়নি ১২ রান করা রোহিতের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান সিরিজে এখনও বড় ইনিংস খেলতে না পারা বিরাট কোহলি ফিরতে পারতেন ব্যক্তিগত ৯ রানের সময়। কুনেমানের বলে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন কোহলি। তা সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটারের গ্লাভসে লেগে গালিতে চলে যায়। তবে সেটা লুফে নিতে পারেননি কেউ। সেসময় আঙুলে ব্যথা পাওয়ায় মাঠে এসে কোহলির সেবা শুশ্রূষা করেন ফিজিও। যদিও সেই ওভারেই আউট হয়েছেন তিনি। কুনেমানের নিচু হয়ে যাওয়া শর্ট ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ১৩ রান করা কোহলি।
অস্ট্রেলিয়ার স্পিন আক্রমণ সামলাতে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে রবীন্দ্র জাদেজাকে পাঁচে পাঠায় ভারত। যদিও সেটা খুব বেশি কাজে দেয়নি স্বাগতিকদের। লায়নের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে ফেরেন ৭ রান করা জাদেজা। যদিও শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার জো উইলসন। তবে রিভিউ নিয়ে জাদেজাকে সাজঘরে পাঠায় অজিরা। আইয়ার ব্যাটিংয়ে এসে খানিকটা আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। তবে স্টার্কের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে উসমান খাওয়াজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৭ বলে ২৬ রান করা এই ব্যাটার। এদিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে নিয়মিত সুযোগ পেয়েও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি কেএস ভরত।
প্রথম ইনিংসে ১৭ রান করা এই উইকেট কিপার ব্যাটার লায়নকে উইকেট দিয়েছেন মাত্র ৩ রান করে। তাতে মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট হারায় ভারত। ব্যাটারদের এমন আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন পূজারা। দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর কুনেমানের বলে জীবন পেয়েছেন পূজারা। অশ্বিনকে আউট করে পাঁচ উইকেট তুলে নেন লায়ন। পরবর্তীতে এক ওভারে পূজারা ও উমেশকে আউট করেন অজি এই স্পিনার। আর সিরাজকে ফিরিয়ে ভারতকে ১৬৩ রানে অল আউট করে সফরকারীরা। অজিদের হয়ে একাই ৮ উইকেট নিয়েছেন লায়ন। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে মাত্র ৭৫ রানে এগিয়ে ভারত। ফলে ম্যাচ জিততে স্মিথের দলের প্রয়োজন মাত্র ৭৬ রান।