শেষের হতাশার পরও জিইয়ে আছে পাকিস্তানের স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দিনের খেলা তখন শেষ হওয়ার পথে, এমন সময় জ্যাক লিচের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা জো রুটের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন ইমাম উল হক। মাথা নিচু করে হতাশায় ডুবে গেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। আনন্দ-উল্লাসে মেতে থাকা মুলতানের গ্যালারি থমকে গেল কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে। তবুও মুলতানে টিকে আছে পাকিস্তানের জয়ের আশা। দুদিন বাকি থাকা মুলতানে জয়ের জন্য পাকিস্তানের চাই ৬ উইকেটে কেবলই ১৫৭ রান।
মুলতানে জয়ের জন্য ৩৫৫ রান তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে বাজি ধরে পাকিস্তান। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করলেও টেস্টে রিজওয়ানের জায়গায় মিডল অর্ডার। তবে এদিন আব্দুল্লাহ শফিকের সঙ্গে রিজওয়ানকে ওপেনিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। সেটা কাজেও দিয়েছে বেশ খানিকটা। জেমস অ্যান্ডারসন-অলি রবিনসনরা বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত ডেলিভারি করলেও সহজেই উইকেট দেননি তারা দুজন।
পঞ্চাশ পেরিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজন মিলে যখন ৬৬ রান যোগ করেছেন তখনই পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন অ্যান্ডারসন। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে বলে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ৩০ রান করা রিজওয়ান। অ্যান্ডারসনের এমন ডেলিভারিতে ফেরার কথা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করলেও এদিন বাবর আজমকে দাঁড়াতেই দেননি রবিনসন। পাকিস্তানের অধিনায়ককে ফিরিয়েছেন মাত্র ১ রানে। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া বল খেলার ইচ্ছেই প্রকাশ করেননি বাবর। তবে দুর্দান্ত ইনসুইংয়ে রবিনসনের এই ডেলিভারি আঘাত হানের পাকিস্তানের অধিনায়কের স্টাম্পে। তাতে খানিকটা বোকা বনে গিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় বাবরকে।
দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা শফিক মার্ক উডকে উইকেট দিয়েছেন নিজের হাফ সেঞ্চুরির ঠিক আগে। উডের ১৪১ কি.মি. গতির নিচু হওয়া বলে পরাস্ত হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দেয়া শফিক আউট হয়েছেন ৪৫ রানের ইনিংস খেলে। এরপর অবশ্য দারুণভাবে জুটি গড়ে তোলেন ইমাম এবং সৌদ সাকিল।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হওয়া ইমাম হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে। রবিনসনের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে এক রান নিয়ে ৮০ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ইমাম। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া সাকিলের হাফ সেঞ্চুরি পেতে খেলতে হয়েছে ১১৫ বল। টানা তিন ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
সাকিলের হাফ সেঞ্চুরির পরের বলেই ৬০ রানে আউট হয়েছেন ইমাম। দিনের শেষ ৩.৩ ওভার সাকিলকে সঙ্গ দিয়েছেন ৩ রান করা ফাহিম আশরাফ। দারুণ ব্যাটিং করা সাকিল অপরাজিত রয়েছেন ৫৪ রানে। তৃতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৯৮ রান। ইংলিশদের হয়ে অ্যান্ডারসন, রবিনসন এবং উড নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
এর আগে বেন ডাকেটের পর হ্যারি ব্রুকের হাফ সেঞ্চুরি বড় লিডের স্বপ্ন দেখেছিল ইংল্যান্ড। লিড বড় হলেও সেটাকে সাধ্যের বাইরে যেতে দেননি পাকিস্তানের বোলাররা। আগের দিনের ৫ উইকেটে ২০২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন ব্রুক এবং বেন স্টোকস। সকালের শুরুতেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ব্রুক। সেঞ্চুরি পেতে ডানহাতি এই ব্যাটার খেলেছেন ১৩৭ বল। স্টোকসের সঙ্গে ব্রুকের জুটি একশ পেরোতেই সেটা ভাঙেন মোহাম্মদ নওয়াজ।
বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে মোহাম্মদ আলীকে ক্যাচ দিয়ে ৪১ রানে ফিরেছেন স্টোকস। সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ব্রুকও। ১০৮ রান করা এই ব্যাটার উইকেট দিয়েছেন জাহিদ মেহমুদকে। এরপর আর কেউ সেভাবে দাঁড়াতে না পারলে ২৭৫ রানে অল আউট হয় ইংল্যান্ড। তাতে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫৫ রান। পাকিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন প্রথম ইনিংস সাত উইকেট নেয়া আবরার আহমেদ।